মাঘী পূর্ণিমা স্নানের আগে মহাকুম্ভে নয়া ট্র্যাফিক নীতি, দুর্ঘটনা থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে আগাম প্রস্তুতি প্রশাসনের?
Maha Kumbh Mela 2025
মাঘী পূর্ণিমা স্নানের আগে মহাকুম্ভে নয়া ট্র্যাফিক নীতি, দুর্ঘটনা থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে আগাম প্রস্তুতি প্রশাসনের?
বুধবার মাঘী পূর্ণিমা তিথি উপলক্ষে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নানের আশায় জড়ো হবেন বহু পুণ্যার্থী। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ভিড় সামাল দিতে মেলাপ্রাঙ্গণে গাড়ি প্রবেশের উপরেও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। ভিড় সামাল দিতে নানা স্তরে রদবদল আনা হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রশাসনিক স্তরে ‘অব্যবস্থা’ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা থামেনি। সোমবারও প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকেছেন পুণ্যার্থীরা। বুধবার আবার মাঘী পূর্ণিমা তিথি রয়েছে। সেই আবহেই জনসমুদ্র সামাল দিতে জারি হল ভিড় এবং ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের নতুন নির্দেশিকা।
বুধবার মাঘী পূর্ণিমা তিথি উপলক্ষে প্রয়াগরাজের ত্রিবেণী সঙ্গমে পুণ্যস্নানের আশায় জড়ো হবেন বহু পুণ্যার্থী। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। ভিড় সামাল দিতে মেলাপ্রাঙ্গণে গাড়ি প্রবেশের উপর জারি হয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। মঙ্গলবার ভোর ৪টে থেকেই মেলাপ্রাঙ্গণে গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিকেল ৫টা থেকে গোটা শহরেই গাড়ি প্রবেশের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। বিভিন্ন রুট দিয়ে আসা গাড়িগুলির জন্য আলাদা আলাদা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের বাইরে থেকে সড়কপথে আসা পুণ্যার্থীদের সকলকেই ওই নির্ধারিত স্থানে যানবাহন পার্ক করতে হবে। বুধবার যত ক্ষণ না পুণ্যার্থীরা নির্বিঘ্নে মেলাপ্রাঙ্গণ ছাড়ছেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত যানবাহনের উপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এমনটাই জানানো হয়েছে নয়া নির্দেশিকায়। তবে জরুরি পরিষেবাগুলিকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখা হয়নি। তা ছাড়া, বিশেষ পরিস্থিতিতে পুণ্যার্থীরাও এই ছাড় পাবেন।
মাঘী পূর্ণিমা তিথির প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার রাতেই বিভিন্ন জেলার পুলিশ এবং নাগরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ওই বৈঠকের পরেই জারি করা হয়েছে নতুন নির্দেশিকা। বৈঠকে শহর জুড়ে পাঁচ লক্ষেরও বেশি যানবাহন সুষ্ঠু ভাবে পার্ক করার মতো পরিকাঠামো তৈরিতে জোর দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় যাতে কোনও ভাবেই যানজট না তৈরি হয়, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে।
গত ২৯ জানুয়ারি গভীর রাতে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে অন্তত ৩০ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। সে দিন রাতেই প্রয়াগরাজ, বারাণসী, অযোধ্যা, মির্জাপুর প্রভৃতি বিভিন্ন জেলার সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে ভিডিয়ো বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ওই বৈঠকের পরেও বেশ কিছু নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, মেলাপ্রাঙ্গণে কোনও রকমের যানবাহন প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হবে না। বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল ভিভিআইপি পাসও। মেলা এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছিল। যদিও তার পরেও একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেছে কুম্ভে। কখনও হটএয়ার বেলুন ফেটে আহত হয়েছেন পুণ্যার্থীরা, কখনও আবার আগুন লেগে পুড়ে গিয়েছে একের পর এক তাঁবু। সোমবার প্রায় ৩০০ কিলোমিটার লম্বা যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকেছেন অগণিত পুণ্যার্থী। শুধু ছোট, বড় যাত্রিবাহী গাড়িই নয়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে পণ্যবাহী লরি, ট্রাক, এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সকেও। পুণ্যস্নানের আশা ছেড়ে দিয়ে অনেকেই ফিরতি পথ ধরেছেন। তাই মাঘী পূর্ণিমার পুণ্যস্নানের প্রাক্কালে জনসমুদ্র সামাল দিতে আরও সতর্ক হল প্রশাসন।
মন্তব্যসমূহ